ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পাঁচটি কার্যকারী উপায়

ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে প্রথমে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পাঁচটি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আমাদের জেনে থাকা প্রয়োজন। ফ্রিল্যান্সিং করতে কি কি প্রয়োজন, এটা অনেকের কাছে অনেক রকম কিছু মনে হয়।

ফ্রিল্যান্সিং-শুরু-করার-পাঁচটি-কার্যকরী-উপায়

 আজকে আমরা আলোচনা করব ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পাঁচটি কার্যকারী উপায়। চলুন জেনে নিই  ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে আসলে কি কি প্রয়োজন।

পোস্ট সুচিপত্র 

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রয়োজন প্রাসঙ্গিক দক্ষতা

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পাঁচটি কার্যকরী উপায় সমূহের মধ্যে প্রথমেই যে জিনিসটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে প্রাসঙ্গিক দক্ষতা। ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে হলে প্রথমে প্রয়োজন যে কোন একটা আইটি স্কিল বা কম্পিউটার সংক্রান্ত দক্ষতা। ওই স্কিল এর উপর ভিত্তি করে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং এর যাত্রা শুরু করতে হবে।আপনার যদি ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রাসঙ্গিক স্কিল না থাকে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে একটা স্কিল বা কাজ শিখতে হবে।

 সেই স্কিল বা কাজের সার্ভিস দিয়েই আপনি ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আপনি মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে গেলে আপনাকে কোন না কোন স্কিলে পারদর্শী হতে হবে। সুতরাং ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে আপনি যে বিষয়ে নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন সে বিষয়ে আপনার প্রাসঙ্গিক দক্ষতা থাকতে হবে যদি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চান। এখন বিষয় হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে কোন ধরনের আইটি স্কিল থাকা অত্যাবশক।

প্রথমতঃ বেসিক কম্পিউটার অপারেট করার দক্ষতা থাকা। যেমনঃ ইন্টারনেট ব্রাউজিং, মাইক্রোসফট অফিস সম্পর্কে ধারণা থাকা, ইমেইল অপারেট করতে পারা, গুগল সার্চ করে কোন কিছু জানা ইত্যাদি। দ্বিতীয়তঃ যে বিষয় নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান সে বিষয়ে দক্ষতা থাকা যেমন কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করতে চাইলে অবশ্যই মাইক্রোসফট ওয়ার্ড  অথবা গুগল ডক এ কিভাবে কিছু লিখতে হয় এবং ফরমেট করতে হয় তা জানতে হবে। একইভাবে গ্রাফিক ডিজাইন এর কাজ করতে চাইলে অবশ্যই ফটোশপ কিংবা ইলাসটাটর এর টুলস গুলো জানতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রয়োজন কাজ অনুযায়ী কম্পিউটার

এখন প্রশ্ন আসে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কেমন ধরনের কম্পিউটার থাকতে হবে। এটা নির্ভর করে আপনি কোন ধরনের কাজ করতে চান তার উপর। প্রথমতঃ সহজ স্কিল যেমন  বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ এসইও, ফেসবুক মার্কেটিং, কন্টেন্ট রাইটিং, ডাটা এন্ট্রি ,ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এরকম কাজের জন্য সাধারণ মানের কম্পিউটার হলেও চলবে। খুব ভালো কনফিগারেশনের কম্পিউটার প্রয়োজন নেই।

দ্বিতীয়তঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি সংক্রান্ত কাজ করলে তুলনামূলকভাবে একটু ভালো কনফিগারেশনের কম্পিউটার প্রয়োজন। কারণ এ কাজগুলোর জন্য যে সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় তা অপারেট করতে একটু বেশি শক্তিশালী হার্ডওয়ার প্রয়োজন হয়। অনেকে জানতে চান ল্যাপটপ নাকি ডেক্সটপ কম্পিউটার কিনবেন?যদি আপনার কাজের জায়গা নির্ধারিত থাকে, কম্পিউটার নিয়ে নড়াচড়া করা না লাগে তাহলে ডেক্সটপ কেনা ভালো। 

কেননা একই দামের ল্যাপটপ ও ডেক্সটপ এর মধ্যে তুলনা করলে একটু হাই কনফিগারেশনের ডেক্সটপ পাওয়া যায়। যদি এমন হয় যে আপনার কাজের জায়গা নির্ধারিত নয় কিংবা আপনার যেখানে ইচ্ছা সেখানে বসে বা কম্পিউটার নিয়ে গিয়ে কাজ করতে হবে, সেক্ষেত্রে ল্যাপটপ কম্পিউটার আপনার জন্য পারফেক্ট।

 বেসিক কাজের জন্য ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ দিয়ে কাজ চালানো যাবে। তবে গ্রাফিক্স ডিজাইন বা ভিডিও এডিটিং এর মত কাজের জন্য ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার কম্পিউটার কিনলে স্মুথলি কাজ করা যাবে।

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য টাকা গ্রহণের সিস্টেম জানা প্রয়োজন

ফ্রিল্যান্সিং-শুরু-করার-পাঁচটি-কার্যকরী-উপায়

কাজ যথাযথভাবে কমপ্লিট করার পর বায়ার আপনাকে পেমেন্ট করবেন। যে মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে আপনার বায়ার পেমেন্ট করবেন সে মার্কেটপ্লেস একটা কমিশন চার্জ কেটে নিয়ে বাকি টাকা অর্থাৎ ডলার আপনার ফ্রিল্যান্সার একাউন্টে জমা করবেন। ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস থেকে আপনার হাতে টাকা আনার জন্য আপনার বাংলাদেশী যেকোনো ব্যাংকে যাদের ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট নেওয়ার যোগ্যতা রয়েছে সেসব ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।

ক্ষেত্রবিশেষে ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট সার্ভিস প্রদান করে এমন কোন কোম্পানির কার্ড বা অ্যাকাউন্ট এর মাধ্যমে ও আপনি মার্কেটপ্লেস থেকে টাকা হাতে আনতে পারবেন। এখন বিষয় হচ্ছে মার্কেটপ্লেস থেকে আমরা টাকা আনব কিভাবে। মার্কেট প্লেসে আপনার সেলার কিংবা ফ্রিল্যান্স ওয়ার্কার হিসেবে যত ডলার জমা হয়ে আছে তা উইথড্র করতে হবে। 

উইথড্র করার সময় ডিরেক্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ডলার পাঠাতে পারবেন। এক্ষেত্রে ১ থেকে ১০ কর্ম দিবস সময় লাগতে পারে। যদি কোন কার্ড যেমন payoneer এর মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে চান তাহলে payoneer এর একাউন্টে ডলার ট্রান্সফার বা উইথড্র করা যাবে। পরবর্তীতে তার টাকায় কনভার্ট করে এটিএম বুথ থেকে উত্তোলন করা যাবে।

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রয়োজন কাজের পোর্টফোলিও তৈরি করা 

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পাঁচটি কার্যকরী উপায় সমুহের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপায় হচ্ছে কাজের পোর্টফোলিও তৈরি করা। পোর্টফোলিও হচ্ছে এমন একটি জায়গা যেখানে মানুষ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র ফাইল বন্দি করে রাখে। আর কাজের পোর্টফোলিও হচ্ছে আপনি এখন পর্যন্ত কি কি কাজ করেছেন, কবে করেছেন, কোথায় কার জন্য করেছেন সেগুলোর ভেরিফাইড কপি একটা জায়গায় সংরক্ষণ করে রাখা। যখন প্রয়োজন হবে তা খুলে দেখানো হবে।


অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং জগতে যেহেতু সবকিছু অনলাইনে হয় সেহেতু আপনার সকল কাজ, কাজের আউটপুট, অভিজ্ঞতা অনলাইনে থাকতে হবে। যে কেউ আপনার কাজ দেখতে চাইলে তাকে আপনার পোর্টফোলিও এর লিংক দিলে ওই ব্যক্তি আপনার কাজ সম্পর্কে জানতে পারবেন সহজে। এখন কথা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য পোর্টফোলিও তৈরি করব কিভাবে। আপনি যে স্কিল জানেন সেটি সংক্রান্ত কিছু কাজ করে তা একত্রিত করুন।

 আপনার কাজের ক্ষেত্র অনুযায়ী পোর্টফোলিও ওয়েবসাইটে কাজগুলো আপলোড করতে পারেন অথবা ডিটেলস বর্ণনা করতে পারেন। আপনার কাজ অনুযায়ী কাজের পোর্টফলিও ওয়েবসাইট না পেলে, কাজের আউটপুট গুলো গুগল ড্রাইভে রেখে দিতে পারেন। প্রয়োজনের সময় শুধু লিংক শেয়ার করে আপনার পোর্টফোলিও দেখাতে পারবেন। 

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রয়োজন একটি সার্টিফিকেট থাকা

ফ্রিল্যান্সিং-শুরু-করার-পাঁচটি-কার্যকরী-উপায়

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পাঁচটি কার্যকারী উপায় সমুহের মধ্যে একটি জরুরী উপায় বা ধাপ হচ্ছে একটি সার্টিফিকেট থাকা। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য একটি সার্টিফিকেট থাকা খুব জরুরী। তবে সার্টিফিকেট ছাড়াও আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। একটি জরিপে দেখা গেছে যাদের নির্দিষ্ট স্কিল সংক্রান্ত কোনো কোর্স এর সার্টিফিকেট আছে কিংবা অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট আছে তাদের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা 70% বেড়ে যায়।

আপনি যে স্কিলটি শিখেছেন কিংবা ওই স্কিল সংক্রান্ত কোন কাজ করার মত যোগ্যতা রাখেন, এটা ক্লায়েন্টকে বুঝানোর প্রথম ধাপ হচ্ছে ওই স্কিল সংক্রান্ত কোনো কোর্সের সার্টিফিকেট। আপনি কোন প্রতিষ্ঠানে আপনার স্কিল সংক্রান্ত কোন কাজ বা সেবা প্রদান করেছেন সে অভিজ্ঞতা সার্টিফিকেটটি আপনার যোগ্যতা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।

শেষ কথা - ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পাঁচটি কার্যকারী উপায়

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পাঁচটি কার্যকারী উপায় নিয়ে আলোচনা করলাম। আশা করি আপনারা আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছেন কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চান তাহলে ভালো কোন ফ্রিল্যান্সিং ইনস্টিটিউট থেকে ফ্রিল্যান্সিং কোর্সে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিন্যান্সিং শুরু করে দেন। ধৈর্য সহকারে নিয়মিত কাজ করবেন। দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি সফলকাম হবেন ইনশাল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাওদাকেয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url