বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম
বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুরুতেই বলে রাখি আর্টিকেল লেখার সঠিক নিয়ম মেনে আর্টিকেল লিখলে গুগলে সহজে র্যাঙ্ক করা যায়। এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল সঠিকভাবে অনেকে করতে পারে না। যার ফলে আপনার আর্টিকেল গুগল রাংকিং এ অনেক পিছিয়ে পড়ে।
আজকে আমরা বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। আজকের আলোচনা থেকে আপনি শিখতে পারবেন এসইও আর্টিকেল লেখার নিয়ম এবং কিভাবে একটি প্রফেশনাল বাংলা আর্টিকেল লিখতে হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রফেশনাল বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম সম্পর্কে।
পোস্ট সুচিপত্রঃ বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম
- বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম কিওয়ার্ড রিসার্চ করা
- ফোকাস কিওয়ার্ড নির্বাচন করা
- আকর্ষণীয় টাইটেল নির্বাচন করা
- আর্টিকেলে আকর্ষণীয় ভুমিকা বাটন যুক্ত করা
- আর্টিকেলে আকর্ষণীয় ভূমিকা যুক্ত করা
- আর্টিকেলে পেজ সূচিপত্র তৈরি করা
- পুরো আর্টিকেল হেডিং আকারে লেখা
- আর্টিকেলে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা
- আর্টিকেলের মধ্যে আরো পড়ুন সেকশন উল্লেখ করা
- আর্টিকেলের মধ্যে ফিচার ইমেজ তৈরি করা
- আর্টিকেলের মধ্যে লাইন গ্যাপ এবং ইন্টার দেওয়ার নিয়ম
- আর্টিকেলে লেখকের শেষ কথা অর্থাৎ উপসংহার লিখতে হবে
- আর্টিকেলে পার্মালিংক যুক্ত করা
- সার্চ ডেসক্রিপশনে লেখা যুক্ত করা
- আর্টিকেলকে এসইও করার আরো কিছু নীতিমালা
- শেষ কথা- বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম
বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম কিওয়ার্ড রিসার্চ করা
বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম জানার আগে আমাদেরকে একটি সঠিক কিওয়ার্ড রিসার্চ করা শেখা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর্টিকেল লেখার জন্য এমন একটি মেইন কীওয়ার্ড বাছাই করুন যা দিয়ে আপনার লেখার বিষয়বস্তুকে একবাক্যে বুঝানো যায় অর্থাৎ মূল থিমটি ধারণ করতে পারে। আর্টিকেল লেখার জন্য বাছাই করা মেইন কিওয়ার্ডটিতে অবশ্যই সার্চ ভ্যালু থাকতে হবে অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিনে বেশি সার্চ হওয়া কোন কিওয়ার্ড বাছাই করুন।
এমন একটি কিওয়ার্ড বাছাই করুন যার জন্য প্রতিযোগিতা কম। কিওয়ার্ডটি নিয়ে খুব বেশি ওয়েবসাইটে লেখা হয়নি এমন হলে ভালো হয়। বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম মেইন কিওয়ার্ড সনাক্ত করার পরে আর্টিকেলে ব্যবহার করার জন্য দুই থেকে চারটি সেকেন্ডারি বা রিলেটেড কিওয়ার্ড বাছাই করুন।
রিলেটেড কিওয়ার্ড গুলো আপনার মূল কিওয়ার্ডের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত হতে হবে। একটি আর্টিকেলে কয়েকটি রিলেটেড কিওয়ার্ড ব্যবহার করলে সার্চ ইঞ্জিনে আর্টিকেলটি কোন টপিকের উপর করা হয়েছে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় যা আরো ভালো র্যাংক করতে সহায়তা করে।
রিলেটেড কিওয়ার্ড সার্চ করার উপায়ঃ গুগলে আপনার মেইন কিওয়ার্ডটি লিখে সার্চ করুন। সার্চ রেজাল্টের নিচে রিলেটেড সার্চ লিস্ট গুলো দেখতে পাবেন। মূল কিওয়ার্ডের সাথে সম্পর্কিত দুই থেকে তিনটি এল এস আই কিওয়ার্ড বাছাই করে নিন। এখন আপনার কাছে একটি মেইন কিওয়ার্ড এবং কয়েকটি রিলেটেড কিওয়ার্ড রয়েছে। এখন আপনি আর্টিকেল লেখা শুরু করুন।
ফোকাস কিওয়ার্ড নির্বাচন করা
বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়মসমূহের মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ফোকাস কিওয়ার্ড নির্বাচন করা। ফোকাস কিওয়ার্ড হচ্ছে একটি আর্টিকেলের হৃদপিণ্ড। ফোকাস কিওয়ার্ড ছাড়া কোন আর্টিকেল গুগলে সার্চ পেজে আসে না। এখন আপনার জানার বিষয় হচ্ছে ফোকাস কিওয়ার্ড আসলে কি আর কেনই বা আর্টিকেল লেখার জন্য ফোকাস কিওয়ার্ড এত গুরুত্বপূর্ণ।
ধরুন কিভাবে আর্টিকেল লিখতে হয় তা আপনি জানেন না। এখন আপনি একটি আর্টিকেল লেখার জন্য বা আর্টিকেল লিখার যাবতীয় বিষয় জানার জন্য গুগলে বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম লিখে সার্চ দিবেন। আর এভাবে কিছু জানার জন্য যা লিখে গুগলে সার্চ দিবেন সেটাই হচ্ছে ফোকাস কিওয়ার্ড।
এখন আপনার বুঝতে সুবিধা হচ্ছে আপনি যে বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লিখবেন সে বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য মানুষ যা লিখে গুগলে সার্চ করবে সেটাই হচ্ছে আপনার আর্টিকেলের ফোকাস কিওয়ার্ড।
একটি বিষয়ে জানার জন্য মানুষ অনেক ধরনের ফোকাস কিওয়ার্ড দিয়ে গুগলে সার্চ করে থাকেন। যেমন ধরুন অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে মানুষ জানতে চাইলে এক একজন এক এক ভাবে লিখে গুগলে সার্চ করে থাকেন। এ সম্পর্কে কয়েকটি ফোকাস কি ওয়ার্ড এর তালিকা তুলে ধরলাম।
আরো পড়ুনঃ অনলাইন ইনকাম সাইট বিকাশ পেমেন্ট
- অনলাইন ইনকাম সাইড
- অনলাইন ইনকাম মোবাইল দিয়ে
- অনলাইন ইনকাম করার উপায়
- অনলাইন ইনকাম সাইট বিকাশ পেমেন্ট
- ঘরে বসে অনলাইন ইনকাম করার উপায়
- ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করার উপায় ইত্যাদি
উপরের সবগুলোই হচ্ছে ফোকাস কিওয়ার্ড যা লিখে মানুষ গুগলে সার্চ করে থাকে। উপরোক্ত সমস্ত কিওয়ার্ডগুলোকে টার্গেট করে একটি অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত আর্টিকেল লেখা হয়ে থাকে। আর্টিকেলে ফোকাস কিওয়ার্ড লিখার নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা গুলো হচ্ছেঃ
- ফোকাস কিওয়ার্ড আর্টিকেলের মধ্যে কমপক্ষে ১০ বার ব্যবহার করতে হবে।
- সেই একই ওয়ার্ড মোটিফাই করে আরো পাঁচবার ব্যবহার করতে হবে।
- অতএব ফোকাস কিওয়ার্ড আর্টিকেলের মধ্যে মোট ১৫ বার ব্যবহার করতে হবে।
- সেকেন্ডারি কিওয়ার্ড আর্টিকেলের মধ্যে হুবহু ৫ বার ব্যবহার করতে হবে।
- একই কিওয়ার্ড মোটিফাই করে আর্টিকেলের মধ্যে আরও তিনবার ব্যবহার করতে হবে।
- সেকেন্ডারি কিওয়ার্ড আর্টিকেলে সর্বমোট আটবার ব্যবহার করতে হবে।
- সম্পূর্ণ আর্টিকেলের মধ্যে সর্বনিম্ন পাঁচটি লং টেইল এলএসআই কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।
- ফোকাস কিওয়ার্ড রিলেটেড অন্যান্য যে কিওয়ার্ডগুলো থাকবে তা আর্টিকেলের মধ্যে পাঁচ থেকে সাত বার ব্যবহার করতে হবে।
আকর্ষণীয় টাইটেল নির্বাচন করা
বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম এর মধ্যে আকর্ষণীয় টাইটেল নির্বাচন করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। টাইটেল হচ্ছে একটি আর্টিকেলের শিরোনাম। একটি আর্টিকেলের শিরোনাম পড়ে বোঝা যায় পুরো আর্টিকেলে কি থাকছে। প্রতি ১০ জন পাঠকের মধ্যে ৮জন পাঠকই শুধুমাত্র আর্টিকেলের টাইটেল পড়েই পুরো আর্টিকেল না পড়ে অন্য কোথাও চলে যায় যদি আর্টিকেলের টাইটেল তাদের পছন্দ না হয়।
এজন্য আর্টিকেলের টাইটেল হতে হবে আকর্ষণীয় যাতে পাঠক আর্টিকেলের প্রতি আকৃষ্ট হয়। কি, কিভাবে, যেভাবে কিংবা লিস্ট বেইজ শব্দ যেমন ৫টি, ১০টি, ১৫টি ইত্যাদি আর্টিকেলের শিরোনামে রাখলে পাঠকরা আর্টিকেল করতে আকৃষ্ট হতে পারে। আর্টিকেলে টাইটেল লিখার কিছু নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা গুলো হচ্ছেঃ
- টাইটেল লোভনীয় করে লিখতে হবে।
- আর্টিকেলের টাইটেল সর্বনিম্ন ৫ শব্দ ও সর্বত্র ৮ শব্দের মধ্যে হবে।
- বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া (?,-,ঃ,) এইসব চিহ্ন ব্যবহার করা যাবে না।
- আর্টিকেলের টাইটেল শুরু করতে হবে ফোকাস কিওয়ার্ড দিয়ে।
আর্টিকেলে আকর্ষণীয় ভুমিকা বাটন যুক্ত করা
বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম সমূহের মধ্যে আর্টিকেলকে আকর্ষণীয় করে তোলার আরেকটি উপায় হচ্ছে আর্টিকেলে আকর্ষণীয় ভূমিকা বাটন যুক্ত করা। বিভিন্ন আর্টিকেলে দেখবেন অন্য পেজ এর লিংক বা ডাউনলোড লিংক বা বাটনের মত দেখায় যা দেখতে খুবই সুন্দর ও মানানসই। ভূমিকা বাটন আর্টিকেল কে আরো বেশি আট্রাক্টিভ করে তোলে। আপনিও আপনার আর্টিকেলে ডাউনলোড লিংক বা ভূমিকা বাটন যুক্ত করবেন। ভূমিকা বাটন বানানোর কিছু নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা গুলো হচ্ছেঃ
- আর্টিকেলে ভূমিকা বাটন বানাতে হবে। অবশ্যই শুরুতে রাখতে হবে।
- ভুমিকা বাটনে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ ছয়টি শব্দ রাখা যাবে।
- অবশ্যই বাটনের মধ্যে ওই পোস্ট রিলেটেড অন্য পোস্টের লিঙ্ক দিতে হবে।
আর্টিকেলে আকর্ষণীয় ভূমিকা যুক্ত করা
বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আর্টিকেলে আকর্ষণীয় ভূমিকা যুক্ত করতে হবে। আর্টিকেলের ভূমিকা কে আকর্ষণীয় করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভূমিকাতে এমন কিছু লিখবেন যাতে পাঠক আর্টিকেলের শুরুর ভূমিকা পরে বুঝতে পারে পুরো আর্টিকেলে সে কি পেতে যাচ্ছে।
অনেক পাঠক শুধুমাত্র ভূমিকা পড়ার পর পুরো আর্টিকেল না পড়েই অন্য কোথাও চলে যায়, যদি সে ভূমিকাতে ক্লিয়ার তথ্য না পায়। তাই আপনাকে ভূমিকাতে পুরো আর্টিকেলের আসল সারমর্ম তুলে ধরতে হবে। এক কথায় ভূমিকাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। আর্টিকেলে ভূমিকা লিখার কিছু নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা গুলো হচ্ছেঃ
- ভূমিকা শুরু করতে হবে ফোকাস কিওয়ার্ড দিয়ে।
- ভূমিকার মধ্যে ফোকাস কিওয়ার্ড এবং সেকেন্ডারি কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে ।
- ভূমিকা মোট চার লাইন লিখতে হবে।
- ফিচার ইমেজ এর ওপরে দুই লাইন ও ফিটার ইমেজ এর নিচে দুই লাইন।
- ভূমিকা লেখা শুরুর আগে কোন গ্যাপ রাখা যাবে না।
- ভূমিকার মধ্যে একই ফোকাস কিওয়ার্ড পরপর ব্যবহার করা যাবে না।
আর্টিকেলে পেজ সূচিপত্র তৈরি করা
বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম এর মধ্যে আরও একটি কার্যকরী নিয়ম হচ্ছে আর্টিকেলের ভূমিকা লেখার পরে পেজ সূচিপত্র তৈরি করা এবং সেই সূচিপত্রে আর্টিকেলে আলোচিত প্রত্যেকটি মূল বিষয় অর্থাৎ হেডিং এর লিংকিং করা। এতে করে আর্টিকেল পড়ার শুরুতে সূচিপত্র দেখে বুঝা যায় পুরো আর্টিকেলে কোন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং পুরো আর্টিকেলের মধ্যে যে বিষয়টি পাঠকের প্রয়োজন সে বিষয়টি পাঠক খুব সহজে সূচিপত্রের মাধ্যমে খুঁজে পাবেন।
পেজ সূচিপত্রে উল্লেখিত বিষয়ের উপর ক্লিক করলে পাঠক সরাসরি সে বিষয়ে মধ্যে চলে যাবে। এর ফলে পাঠকের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো পড়তে খুব সুবিধা হবে। পেজ সুচিপত্র তৈরি করার কিছু নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা গুলো হচ্ছেঃ
- পেইজ সূচিপত্রে সর্বনিম্ন ১০ টি হেডিং ব্যবহার করতে হবে।
- সকল ধরনের হেডিং বা সাব হেডিং পেজ সূচিপত্রের আন্ডারে থাকবে।
- পেজ সূচিপত্রের প্রত্যেকটি হেডিং বুলেট লিস্টিং করতে হবে।
- পেজ সূচিপত্রের প্রত্যেকটি হেডিং এ নাম্বার লিংকিন করতে হবে।
পুরো আর্টিকেল হেডিং আকারে লেখা
বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম সমূহের মধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হচ্ছে পুরো আর্টিকেলটি হেডিং আকারে লেখা। আর্টিকেলে হেডিং এর প্রয়োজনীয়তা অনেক বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ এর কয়েকটি প্রধান কারণ নিচে তুলে ধরা হলোঃ
পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করাঃ হেডিং আর্টিকেল এর মূল বিষয়বস্তুকে সংক্ষেপে প্রকাশ করে এবং পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। একটি আর্টিকেলের হেডিং পাঠকদের আর্টিকেলটি পড়তে উদ্বুদ্ধ করে।
সংগঠন ও কাঠামো প্রদানঃ হেডিং আর্টিকেলের ভেতরের বিভিন্ন অংশকে আলাদা করে এবং আর্টিকেলে একটি সুসংগঠিত কাঠামো তৈরি করে। আর্টিকেল হেডিং আকারে লিখার ফলে পাঠক সহজে বিভিন্ন অংশ খুঁজে পেতে পারে।
SEO উন্ন্যনঃ হেডিং এর মাধ্যমে আর্টিকেলটি সার্চ ইঞ্জিনের সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। সঠিকভাবে কিওয়ার্ড ব্যবহার করলে সার্চ ইঞ্জিন রেংকিং এ উন্নতি ঘটে।
পাঠকের স্বচ্ছতা বৃদ্ধিঃ একটি আর্টিকেলের হেডিং এর মাধ্যমে পাঠককে বোঝাতে সাহায্য করে যে কোন অংশে কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এতে পাঠক আর্টিকেলটি দ্রুত এবং কার্যকর ভাবে বুঝতে পারে।
পাঠককে আর্টিকেলের মধ্যে ধরে রাখাঃ একটি আর্টিকেলের হেডিং আর্টিকেলটি স্ক্যান করার সময় দ্রুত ধারণা পেতে সাহায্য করে যা পাঠককে দীর্ঘ সময় ধরে রাখার সম্ভাবনা বাড়ায়।
একটি আর্টিকেলের হেডিং শুধুমাত্র আর্টিকেলের সৌন্দর্য বাড়ায় না এটি আর্টিকেলের কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করে। আর্টিকেলে হেডিং লেখার কিছু নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা গুলো হচ্ছেঃ
- আর্টিকেল এর প্রত্যেকটি হেডিং এ ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে ।
- হেডিং এ পরপর একই কি ওয়ার্ড বসানো যাবেনা।
- হেডিং এ কোন চিহ্ন বসানো যাবে না।
- হেডিংগুলোতে সর্বোচ্চ আটটি শব্দ ব্যবহার করতে হবে।
- হেডিং এর নিচে সর্বনিম্ন তিনটি প্যারা রাখতে হবে।
- হেডিং এর নিচে সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে ছয়টি প্যারা রাখা যাবে। এর বেশি হলে সাবহেডিং দিয়ে লিখতে হবে।
- প্যারা শুরু করতে হবে ফোকাস কিওয়ার্ড বা সেকেন্ডারি কিওয়ার্ড দিয়ে।
- প্রতিটি প্যারা তিন থেকে সাড়ে তিন লাইন হতে হবে।
আর্টিকেলে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা
বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম এর মধ্যে আরও একটি প্রয়োজনীয় বিষয় হচ্ছে আর্টিকেলে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা। আর্টিকেলে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা বলতে লেখার মূল বিষয়বস্তু বা থীমকে স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করার প্রক্রিয়াকে বুঝায়। এটি সাধারণত পাঠকের সুবিধার্থে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাসঙ্গিক তথ্যগুলোকে গুছে তুলে ধরার একটি কৌশল। এর মাধ্যমে পাঠক মূল বার্তাটি সহজে বুঝতে পারে এবং লেখার মূল উদ্দেশ্য সঠিকভাবে পৌঁছে যায়। আর্টিকেলের মধ্যে তথ্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলোঃ
স্পষ্টতা ও প্রাসঙ্গিকতাঃ আপনি আর্টিকেলে তথ্যকে সংক্ষিপ্ত কিন্তু প্রাসঙ্গিকভাবে তুলে ধরুন। অপ্রয়োজনীয় বিবরণ এড়িয়ে চলুন। মূল বিষয়বস্তু সহজবোধ্যভাবে উপস্থাপন করুন।
বিষয়বস্তু অনুসারে বিন্যাসঃ আর্টিকেল লিখার বিষয়ের ধরন অনুযায়ী আপনাকে তথ্য সাজাতে হবে। এতে করে পাঠক সহজে মূল ধারণা গুলো ধরতে পারবে।
সংক্ষেপ ও নির্ভুলতাঃ আর্টিকেলে তথ্য তুলে ধরার সময় আপনাকে সংক্ষিপ্ততা বজায় রাখতে হবে কিন্তু তা যেন নির্ভুল হয়। বেশি দীর্ঘ বা অপ্রয়োজনীয় তথ্য বিষয়বস্তুকে দুর্বুদ্ধ করে তুলতে পারে।
উদাহরণ বা তথ্যচিত্রের ব্যবহারঃ আর্টিকেলে তথ্যকে আরো সহজ ও স্পষ্ট ভাবে বোঝাতে আপনাকে উদাহরণ বা চিত্র ব্যবহার করতে হবে। এটি পাঠককে লেখার সাথে সংযোগ ঘটাতে সহায়ক হবে।
এইসব কৌশল ব্যবহার করে আর্টিকেলের তথ্য তুলে ধরা হলে পাঠক তা থেকে সঠিক ও প্রয়োজনীয় বার্তা পেতে পারে।
আর্টিকেলের মধ্যে আরো পড়ুন সেকশন উল্লেখ করা
বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম সমূহের মধ্যে আরো পড়ুন সেকশন অন্যতম। আপনি যে বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লিখছেন সে বিষয় রিলেটেড অন্য কোন আর্টিকেলের লিঙ্ক যুক্ত করুন আরো করুন সেকশনে। এতে করে পাঠক একটি আর্টিকেল পড়ার সাথে সাথে অন্য আরেকটি আর্টিকেল পড়তে পারবে। আর্টিকেলে আরো পড়ুন সেকশন যুক্ত করার কিছু নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা গুলো হচ্ছেঃ
- আর্টিকেলে মোট চার টি আরো পড়ুন সেকশন তৈরি করতে হবে।
- আরো পড়ুন সেকশন ২ প্যারাগ্রাফের মাঝখানে বসাতে হবে।
- আরো পড়ুন সেকশনে ওই আর্টিকেল রিলেটেড অন্য আর্টিকেলের লিঙ্ক দিতে হবে।
আর্টিকেলের মধ্যে ফিচার ইমেজ তৈরি করা
বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়মের মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আর্টিকেলের মধ্যে ফিচার ইমেজ তৈরি করা। ফিচার ইমেজ আর্টিকেলকে অনেক অর্থবোধক ও আকর্ষণীয় করে তোলে। পাঠকরা শুধু লাইনের পর লাইন পরতে পছন্দ করেন না। তারা আর্টিকেলের প্রাসঙ্গিক ফিচার ইমেজ দেখতে পছন্দ করেন। তাই আর্টিকেলের মধ্যে ফিচার ইমেজ বসানো খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফিচার ইমেজ বসানোর ও বানানো কিছু নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা গুলো হচ্ছেঃ
- আর্টিকেলের মধ্যে সর্বনিম্ন তিনটি ফিচার ইমেজ তৈরি করতে হবে।
- ইমেজ গুলো অবশ্যই এমআই দিয়ে বানাতে হবে।
- ইমেজের অল্টারটেক্স ও টাইটেলটেক্সে ফোকাস কিওয়ার্ড বসাতে হবে।
- ফিচার ইমেজ সাইজ হবে ১১০০/৬১৯ px
- ফিচার ইমেজগুলো দুই প্যারাগ্রাফের মাঝে বসাতে হবে।
আর্টিকেলের মধ্যে লাইন গ্যাপ এবং ইন্টার দেওয়ার নিয়ম
অনেকেই আছেন যারা দুই প্যারাগ্রাফের মধ্যে অনেকগুলো এন্টার বা লাইন গ্যাপ দিয়ে থাকেন এবং দুইটি ওয়ার্ডের মধ্যে একের অধিক স্পেস দিয়ে থাকেন, এগুলো করা যাবে না। শুদ্ধ বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম হল সর্বোচ্চ দুইটি ওয়ার্ডের মাঝখানে আপনি একটা গ্যাপ এবং প্যারাগ্রাফ এর মাঝখানে এক লাইন গ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন। বাংলা আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে এগুলো অবশ্যই আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। নিচে কিছু লাইন গ্যাপ এবং এন্টার দেওয়ার নিয়ম দেওয়া হলোঃ
- দুইটি প্যারার মাঝখানে দুইটি এন্টার ব্যবহার করতে পারবেন।
- লাইন গাপ দিয়ে আর্টিকেল লিখা যাবে না।
- আর্টিকেলের মধ্যে অতিরিক্ত স্পেস বা এন্টার দেওয়া যাবে না।
- একেবারে আর্টিকেলের শেষে ইন্টার অথবা স্পেস থাকা যাবে না।
আর্টিকেলে লেখকের শেষ কথা অর্থাৎ উপসংহার লিখতে হবে
বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম এর মধ্যে আর্টিকেলে শেষ কথা অর্থাৎ আর্টিকেলের শেষে উপসংহার থাকা খুব জরুরী। আর্টিকেলে উপসংহার বা সমাপ্তি অংশটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি পাঠকের উপর স্থায়ী প্রভাব ফেলে এবং লেখার মূল পয়েন্টগুলোকে সংক্ষেপে তুলে ধরে। সম্পূর্ণ আর্টিকেল লিখার পর আপনি যে বিষয়ে আর্টিকেল লিখলেন সে বিষয়ের উপর আপনার কিছু মতামত উপসংহারে উল্লেখ করতে হবে।
এটি পাঠককে লেখার মূল বার্তা বা পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে নির্দেশনা দেয়। উপসংহার একটি আর্টিকেল কে সঠিকভাবে শেষ করে যা পাঠকের মনে লেখাটি সম্পূর্ণ হয়েছে এমন অনুভূতি তৈরি করে। আর্টিকেলের ভালো উপসংহার লেখার শেষ মুহূর্তেও পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়তা করে এবং পাঠককে আর্টিকেলটি থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বা ধারণা নিয়ে যেতে উৎসাহিত করে।
উপসংহার ছাড়া একটি লেখা অসম্পূর্ণ মনে হতে পারে এবং পাঠক প্রায়শই কিভাবে বিষয়টি শেষ হয়েছে তা বুঝতে অসুবিধা বোধ করতে পারে। তাই আর্টিকেলের শেষে অবশ্যই আপনাকে একটি ভালো উপসংহার উপস্থাপন করতে হবে। উপসংহার মোট দুইটি প্যারাগ্রাফে শেষ করবেন।
আর্টিকেলে পার্মালিংক যুক্ত করা
বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম এর মধ্যে পার্মালিঙ্ক যুক্ত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পার্মালিংক হচ্ছে একটি আর্টিকেলের সম্পূর্ণ সোর্স লিংক। এর মাধ্যমে একজন পাঠক আর্টিকেল খুব সহজে খুঁজে পায়। ওয়েবসাইট ভেদে পার্মালিংক আলাদা হয়ে থাকে। পার্মালিংক যুক্ত করার নিয়ম নিচে দেওয়া হলঃ
- পার্মালিংক এ ব্যবহৃত শব্দ এক থেকে দুইটি শব্দের মধ্যে লিখতে হবে।
- পার্মালিংকে দুটি শব্দের মাঝে ড্যাস বা হাইপেন চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে।
- কিছু বিশেষ ধরনের শব্দ পার্মালিংক এ ব্যবহার করা যাবে না। (যেমন ও, এবং, অর্থাৎ, অথবা ইত্যাদি)
- আর্টিকেল লেখার সময় যে ফোকাস কিওয়ার্ড টার্গেট করে আপনি আর্টিকেল লিখেছেন সেই ফোকাস কিওয়ার্ডের মূল শব্দ পার্মালিংক এ বসাতে হবে।
সতর্কতাঃ আপনি যে পার্মালিংক দিয়ে আর্টিকেল পাবলিশ করবেন সেই আর্টিকেল যদি ভুল পার্মালিংক দিয়ে পাবলিশ করে ফেলেন তাহলে সে পার্মালিংক আর পরিবর্তন করা যাবে না। আপনি যদি সে পার্মালিংক পরিবর্তন করেন তাহলে সেই আর্টিকেলটিকে আর গুগলে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই পার্মালিংক ব্যবহার করার সময় আপনাকে খুব সতর্ক থাকতে হবে।
সার্চ ডেসক্রিপশনে লেখা যুক্ত করা
সার্চ ডেসক্রিপশনে সাধারণত পুরো আর্টিকেলের সামারি লেখা হয়। আর এই সামারি হয় ১৫০ শব্দের মধ্যে। সার্চ ডেসক্রিপশন এর মাধ্যমে একটি আর্টিকেল কে গুগলের র্যাঙ্কিং করা যায়। তাই আপনাকে প্রত্যেক আর্টিকেলে ১৫০ শব্দের মধ্যে সার্চ ডেসক্রিপশন লেখতে হবে। সবথেকে ভালো হয় আর্টিকেলের ভূমিকার প্রথমে যে দুই লাইন লিখেন, সেই দুই লাইন সার্চ ডেসক্রিপসনে যুক্ত করে দিবেন।
আর্টিকেলকে এসইও করার আরো কিছু নীতিমালা
বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম সমূহের মধ্যে আর্টিকেলকে এসইও করার আরো বেশ কিছু নীতিমালা রয়েছে। আপনি যদি বাংলা আর্টিকেল লিখে ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার লেখা আর্টিকেলকে এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল বানাতে হবে। এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখলে আর্টিকেলকে খুব সহজে গুগলে র্যাংকিং করা যায়। আর্টিকেল লিখার আরো কিছু নীতিমালা নিচে বর্ণনা করা হলোঃ
আরো পড়ুনঃ মাসে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করার উপায়
- আর্টিকেল অবশ্যই নিজেকে লিখতে হবে।
- আর্টিকেলের মধ্যে অথেন্টিক ইনফর্মেশন দিতে হবে।
- প্রয়োজন নাই এমন কোন ইনফরমেশন দিয়ে কন্টেন বড় করা যাবে না।
- AI আর্টিকেল লিখা যাবে না।
- আর্টিকেলের মধ্যে কপি করে কিছু লিখা যাবে না।
- আর্টিকেলের মধ্যে বানান ভুল করা যাবে না।
- আর্টিকেল এর মধ্যে আমি আপনি শব্দ ব্যবহার করতে হবে। আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি আপনি আমি শব্দ ব্যবহার করে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করেন তাহলে পাঠক মনে করবে আপনি তার সাথে গল্প করছেন। পাঠক খুব আনন্দের সাথে পুরো আর্টিকেলটি পড়বে। তাই পুরো আর্টিকেলে আমি আপনি শব্দ ব্যবহার করতে হবে।
- আর্টিকেল সব সময় চলিত ভাষায় লিখতে হবে।
- আর্টিকেলের মধ্যে কাউকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা যাবে না।
- মানুষের পছন্দ নয় বা প্রতিনিয়ত সার্চ হয়না এমন কোন আর্টিকেল লিখা যাবে না।
- আর্টিকেলটি অবশ্যই ১০০% ইউনিক হতে হবে কোনভাবে। কোন কপি-পেস্ট করা যাবে না। আর্টিকেলে প্লাগারিজম থাকলে তা সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করা দূরের কথা বরং আপনার সাইটের আরো ক্ষতি করবে। তাই আর্টিকেল পাবলিশ করার আগে অবশ্যই চেক করে নিবেন আপনার আর্টিকেল ইউনিক কিনা।
- প্রতিদিন সর্বনিম্ন একটি করে আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে।
- আর্টিকেল সর্বনিম্ন ১৫০০ শব্দের লিখতে হবে।
- প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে।
- টাইটেলে ষাটটার বেশি ক্যারেক্টার রাখা যাবে না।
শেষ কথা- বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম
বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম সম্পর্কে আমরা বেশ কিছু বিষয় আলোচনা করলাম। এই আলোচনা শেষে আমরা বলতে পারি বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম একটি সৃজনশীল ও কৌশলগত প্রক্রিয়া। সফল একটি আর্টিকেল লেখার জন্য ভাষার সঠিক ব্যবহার, বিষয় বস্তুতে গভীরতা এবং পাঠকের প্রয়োজনকে মাথায় রেখে লেখা উচিত।
আর্টিকেলের আকর্ষণীয় শিরোনাম, পরিচ্ছন্ন গঠন, সহজবোধ্য ভাষা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান লেখাটিকে পাঠকের কাছে মূল্যবান করে তোলে। এতক্ষণ বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম। আশা করছি আলোচনা থেকে আপনারা বুঝতে পেরেছেন কিভাবে বাংলা আর্টিকেল লিখবেন। সঠিক নিয়ম মেনে আর্টিকেল লিখবেন ইনশাআল্লাহ বাংলা আর্টিকেল লেখায় সফলতা অর্জন করবেন।
সাওদাকেয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url